
বিদেশগামী অভিবাসী কর্মীদের জন্য প্রাক-বহির্গমন ওরিয়েন্টেশন




ভূমিকা:
বর্তমানে বিশ্বের ১৬৮টি দেশে বাংলাদেশী কর্মীরা বিভিন্ন পেশায় অভিবাসন করে থাকেন। বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মীদের নিরাপদ অভিবাসন সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অবহিতকরণের লক্ষ্যে এই পুস্তিকাটি প্রস্তুত করা হয়েছে। একজন অভিবাসী কর্মী “বিদেশে গমনেচ্ছু কর্মীদের প্রাক বহির্গমন প্রশিক্ষণ পুস্তিকা” অনুযায়ী প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে উপকৃত হবে।
প্রাক বহির্গমন প্রশিক্ষণ গ্রহণের উদ্দেশ্য-
বৈধ, নিরাপদ ও গতিশীল অভিবাসনের লক্ষ্যে কর্মীদের প্রাক-বহির্গমন প্রস্তুতি সংক্রান্ত তথ্য প্রদান এবং মানব পাচারকারী/অবৈধ দালালদের প্রতারণা হতে সাবধান থাকার উপায় সম্পর্কে অবহিতকরণ। বৈধ উপায়ে স্বল্প খরচে বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে ধারণা প্রদান। বিদেশ গমনের প্রক্রিয়ার জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর সহযোগিতার বিষয়ে ধারণা প্রদান। যাত্রাপথে বিমানবন্দরে ও বিদেশে পৌঁছানোর পর করণীয়।
অভিবাসী কর্মীদের স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক পরামর্শ প্রদান এবং কর্মক্ষেত্রে ও অন্যান্য ক্ষেত্রে নিরাপত্তা বিধি অনুসরণ সম্পর্কিত তথ্য প্রদান। বিদেশ হতে বৈধ পথে অর্থ প্রেরণের উপায় ও প্রেরিত অর্থের সঠিক বিনিয়োগ। বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক প্রদত্ত সেবাসমূহ। বাংলাদেশী কর্মীদের কর্মক্ষেত্রে ও পরিবেশ সম্পর্কে ধারণা প্রদান।
চুক্তিপত্র অনুযায়ী কর্মীদের প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা যেমন: কর্মঘন্টা, বেতন, ছুটি, ওভারটাইম, যাওয়া-আসার বিমান ভাড়া ইত্যাদি বিষয়ে চাকুরীদাতার সাথে করণীয় সম্পর্কে অবহিতকরণ এবং অভিবাসী কর্মীদের কর্মস্থলের নিরাপত্তাসহ সার্বিক সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে অভিবাসন সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে তাদের অভিবাসনকে নিরাপদ ও সহজতর করা।
১. বৈধ অভিবাসনের মাধ্যমসমূহ:
- জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো
- বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সি
- বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপমেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল)
- ব্যক্তিগত পর্যায়ে সংগৃহীত ভিসার মাধ্যমে।
বৈধ অভিবাসনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসমূহ:
- জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস কর্তৃক রেজিস্ট্রেশন
- পাসপোর্ট
- ভিসা
- চুক্তিপত্র
- ফিঙ্গার প্রিন্ট প্রদান ও বিএমইটি হতে বহির্গমন ছাড়পত্র।
২. দালাল বা মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছ থেকে নিরাপদ থাকার উপায়:
- বিএমইটি হতে বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকা পরীক্ষা করা
- বিদেশ গমনের ক্ষেত্রে বিনা রশিদ কাউকে কোন অর্থ প্রদান না করা
- নিয়োগকর্তা/কোম্পানীর নাম, কর্মস্থল, কর্মঘন্টা, বেতন ভাতাদি ও অন্যান্য শর্তাদির বর্ণনা সম্বলিত চাকুরির চুক্তিনামা নিয়োগকর্তা।
- ক্ষমতাপ্রাপ্ত রিক্রুটিং এজেন্সি কর্তৃক স্বাক্ষরিত হতে হবে
- চূড়ান্তভাবে বিদেশ যাত্রার পূর্বে পাসপোর্ট, ভিসা, বহির্গমন ছাড়পত্র, টিকেট, চাকুরির চুক্তিপত্র ইত্যাদি সংগ্রহ করতে হবে।
৩. বিদেশ গমন লাভজনক কিনা তা যাচাই করা:
বিদেশ গমন লাভজনক কিনা তা ভালোভাবে যাচাই করে দেখা প্রয়োজন আছে। প্রথমে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে যে বিদেশে চাকুরীর ধরণ বা কাজ কি এবং বেতন কত? তারপর বিদেশ যেতে সর্বমোট ব্যয় এবং বিদেশে চাকুরী থেকে আয়ের একটি তুলনামুলক হিসাব করে তবেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। এই ধারণা সঠিক নয় যে একবার বিদেশে পাড়ি দিতে পারলেই ধনী হওয়া যায়। এ ভ্রান্ত ধারণার বশবর্তী হয়ে, দালালের প্ররোচণায় অধিক অর্থ ব্যয় করে বিদেশ গমনের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
অভিবাসনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কিছু পরমর্শ:
- কোন কর্মপোযোগী প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তুলবে হবে
- একমাত্র সম্বল অথবা ভিটামাটি বিক্রি করা যাবে না
- কোন ব্যক্তির নিকট থেকে উচ্চ সুদে ঋণ গ্রহণ করা উচিত নয়
- দালালদের পরিহার করে রিক্রুটিং এজেন্সির সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা উচিত
- চুক্তিপত্র, ভিসা ইত্যাদির সঠিকতা যাচাই করতে হবে
- অন্য কোন ব্যক্তির মাধ্যমে পাসপোর্ট না করে নিজের পাসপোর্ট নিজে করা ভাল
- রিক্রুটিং এজেন্টকে অর্থ প্রদানের বিনিময়ে রশিদ গ্রহণ করতে হবে
৪. বিএমটি’র ডাটাবেজে রেজিস্ট্রেশন:
বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মীদের জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে নাম রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। বিএমইটির রেজিস্ট্রেশন ছাড়া বিদেশে। যাওয়া আইনত নিষিদ্ধ।
রেজিস্ট্রেশনের জন্য যা যা প্রয়োজন:
- রেজিস্ট্রেশন ফরম পূরণ
- দুই কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি
- নিজ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত নাগরিক সনদপত্র
- কারিগরি প্রশিক্ষণ ভাষা প্রশিক্ষণ ইত্যাদি (যদি থাকে)
- শিক্ষাগত যোগ্যতা সনদপত্রের কপি।
৫. পাসপোর্ট সংক্রান্ত তথ্যাবলি:
পাসপোর্ট কোন দেশের নাগরিকের জন্য বিদেশ গমনের কাজে ব্যবহৃত দলিল। বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে স্থানীয় পাসপোর্ট অফিস কর্তৃক পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়। বিদেশে বাংলাদেশি দূতাবাস হতেও পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের পাসপোর্টে ইসরাইল ব্যতীত পৃথিবীর অন্য সকল দেশে গমনের অনুমতি রয়েছে।
মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি)
মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট বা এমআরপি হচ্ছে এমন একটি পাসপোর্ট যাতে আবেদনকারী ব্যক্তিগত তথ্য জলছাপের মাধ্যমে ছবির নিচে লুকায়িত থাকে এবং একই সঙ্গে এতে একটি মেশিন রিডেবল জোন (MRZ) থাকে যা পাসপোর্টধারী ব্যক্তির ব্যক্তিগত তথ্য বিবরণী ধারণ করে।
পাসপোর্ট দালালের মাধ্যমে না করে নিজে করা বাঞ্ছনীয়।
নিজের পাসপোর্ট নিজে না করলে যে সমস্যা হয়-
প্রয়োজনের চেয়ে বেশি টাকা খরচ হতে পারে এবং সময়মতো পাসপোর্ট হাতে না পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
পাসপোর্টে নিজের নাম, পিতার নাম, ঠিকানা, পেশা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো ভুল হয়ে যেতে পারে।
দালালের মাধ্যমে পাসপোর্ট করলে দালাল নিজে রেজিস্টারে স্বাক্ষর দিয়ে অফিস থেকে পাসপোর্ট গ্রহণ করে, ফলে পাসপোর্ট নবায়নের সময় স্বাক্ষরে গড়মিল থাকার কারণে ঝামেলা হতে পারে।
৬. স্বাস্থ্য পরীক্ষা:
বিদেশ গমনের পূর্বে দূতাবাস কর্তৃক নির্ধারিত ক্লিনিকের মাধ্যমে মেডিক্যাল চেকআপ অবশ্যই করাতে হবে। কারণ বিদেশ যাওয়ার পর দ্বিতীয়বার মেডিক্যাল চেকআপ করানো হবে। সেক্ষেত্রে কোন আনফিটনেস রিপোর্ট পাওয়া গেলে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে
৭. ভিসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য:
ভিসা হলো কোন দেশে বৈধভাবে প্রবেশ ও নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে অবস্থান করার অনুমতি পত্র। গন্তব্য দেশের দূতাবাসের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ পাসপোর্টের পাতায় সিল দিয়ে ভিসা প্রদান করে। অভিবাসী কর্মী হিসেবে কাজ করতে গেলে পাসপোর্ট অবশ্যই কর্মসংস্থানভিসা (এমপ্লয়মেন্ট ভিসা) যুক্ত হতে হবে।
জাল ভিসা: জাল ভিসায় দেশ ত্যাগের চেষ্টা করলে বিমান বন্দর ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আটক ও আইন ভঙ্গের জন্য বিচার ও শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। কোন ভাবে দেশের ইমিগ্রেশন অতিক্রম করতে পারলেও বিদেশে পৌঁছানোর পর বিদেশের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের হাতে আটক এবং কারাগারে যেতে হতে পারে। এ ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী জেল হতে পারে এবং দেশে ফিরে আসলেও আইনের মুখোমুখি হতে হয়।
ফ্রি ভিসা: ফ্রি ভিসা বলে কোন ভিসা নেই। অভিবাসী কর্মী হিসেবে বিদেশ যেতে হলে অবশ্যই কোন নিয়োগকর্তার অধীনে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে সুনির্দিষ্ট কর্মচুক্তিতে চুক্তিবদ্ধ হয়ে বিদেশে যেতে হবে। কোন নিয়োগকর্তার অধীনে বিদেশ গমনের পর অধিক বেতনের প্রলোভনে পালিয়ে গিয়ে অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে কাজ করা বেআইনি।
ভিসা যাচাই: সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসের মাধ্যমে ভিসা যাচাই করা যায়। এছাড়াও সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, বাহরাইন এবং কাতার এর ভিসা অনলাইনে যাচাই করে দেখা যায়। ভিসা যাচাইয়ের জন্য জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
স্ব-উদ্যোগে ভিসা সংগ্রহের ক্ষেত্রে বিএমইটি কর্তৃক প্রদত্ত বহির্গমন ছাড়পত্র: স্ব-উদ্যোগে বা আত্মীয় স্বজনের মাধ্যমে ওয়ার্ক পারমিট/এনওসি/এন্ট্রি-পারমিট সংগ্রহ করলে রিক্রুটিং এজেন্টের মাধ্যমে অথবা নিজে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোতে উপস্থিত হয়ে বহির্গমন ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে হবে।
৮. ছাড়পত্রের জন্য যে সকল কাগজপত্র জমা দিতে হয়।
- জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস থেকে প্রদত্ত নিবন্ধন কার্ড এবং ভিসার পৃষ্ঠাসহ পাসপোর্টের প্রথম ৬ পৃষ্ঠার ফটোকপি
- মূল ভিসা এ্যাডভাইস/এন্ট্রি পারমিট/ওয়ার্ক পারমিট/এনওসি এর সত্যায়িত ফটোকপি
- ১৫০ (একশত পঞ্চাশ) টাকা মূল্যমানের নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে ব্যক্তিগত অঙ্গীকারনামা
- পেশাজীবী সরকারি/স্বায়ত্বশাসিত/রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তাদেরকে সংশিষ্ট নিয়োগকর্তা হতে রিলিজ অর্ডার বা প্রেষণপত্র
- একক ভিসায় বিদেশগামী মহিলা কর্মীর ক্ষেত্রে অভিভাবকের নিকট থেকে ১৫০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অনাপত্তি পত্র।
৯. চুক্তিপত্র যাচাই:
বিদেশে যাওয়ার কয়েকদিন আগে এজেন্সির কাছ থেকে চাকুরির চুক্তিপত্র গ্রহণ করতে হবে। চুক্তিপত্রে বর্ণিত যে বিষয়গুলি লক্ষ্য করা প্রয়োজন:
বিদেশে চাকুরী বা পদের নাম এবং কোম্পানি বা নিয়োগকর্তার নাম ও ঠিকানা
স্বাস্থ্যসেবা, খাবার ও বাসস্থানের ব্যবস্থা, সাপ্তহিক ছুটি, অসুস্থ্যতার ছুটি।
চাকুরীর চুক্তির মেয়াদ, মাসিক বেতন এবং বাৎসরিক প্রাপ্য ছুটি, ছুটিতে আসা যাওয়ার বিমান ভাড়া, নিয়মিত কর্ম-ঘন্টা, ওভার-টাইম।
১০. রিক্রুটিং এজেন্সির সাথে অর্থ বিনিময়:
রিক্রুটিং এজেন্সির সাথে টাকা লেনদেনের ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। অভিবাসন ব্যয় বাবদ প্রদেয় সম্পূর্ণ টাকা প্রাথমিক পর্যায়ে এককালীন প্রদান না করে ধাপে ধাপে প্রদান করা যেতে পারে এবং অবশ্যই টাকা প্রদানের রশিদ গ্রহণ করতে হবে। নির্ধারিত ফি এর অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করা যাবেনা। সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সি বিএমইটির তালিকাভুক্ত কিনা এবং ভিসা চুক্তিপত্র সঠিক কিনা তা যাচাই করে নিতে হবে। কর্মীর নিকট থেকে সার্ভিস চার্জসহ সমস্ত অর্থই চেক/ব্যাংক ড্রাফট/পে-অর্ডারের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সির অফিসিয়াল একাউন্টে গ্রহণ করা হয় এবং প্রাপ্তি স্বীকার রশিদ প্রদান করা হয়। বহির্গমন ছাড়পত্র গ্রহণের সময় উক্ত অর্থ পরিশোধের বিবরণ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোতে দাখিল করতে হবে।
ক্র: নং | দেশের নাম | অভিবাসন ব্যয় (টাকা) |
১ | মালয়েশিয়া | কৃষি শ্রমিকের জন্য- ১,৬০,০০০ (এক লক্ষ ষাট হাজার) টাকা অন্য কাজের জন্য- ৩,৮০,০০০ (তিন লক্ষ আশি হাজার) টাকা |
২ | লিবিয়া | ১,৩৫,৫০০ (এক লক্ষ পঁইত্রিশ হাজার পাঁচশত) টাকা |
৩ | বাহরাইন | ১,৭৮,০০০ (এক লক্ষ আটাত্তর হাজার) টাকা |
৪ | সংযুক্ত আরব আমিরাত | ১,৯৭,০০০ (এক লক্ষ সাতানব্বই হাজার) টাকা |
৫ | কুয়েত | ১,০৭,০০০ (এক লক্ষ সাত হাজার) টাকা |
৬ | ওমান | ১,৩০,৫৮০ (এক লক্ষ ত্রিশ হাজার পাঁচশত আশি) টাকা |
৭ | ইরাক | ১,২০,০০০ (এক লক্ষ বিশ হাজার) টাকা |
৮ | কাতার | ১,০০,০০০ (এক লক্ষ) টাকা |
৯ | জর্ডান | ১,৬৫,০০০ (এক লক্ষ পঁইষট্টি হাজার) টাকা |
১০ | সিরিয়া | ১,৩৫,০০০ (এক লক্ষ পঁইত্রিশ হাজার) টাকা |
১১ | মালিয়া | ১,৬৩,০০০ (এক লক্ষ তেষট্টি হাজার) টাকা |
১২ | মালদ্বীপ | ১,৩৬,০০০ (এক লক্ষ ছত্রিশ হাজার) টাকা |
১৩ | ব্রুনাই | ২,০৫,৯০০ (দুই লক্ষ পাঁচ হাজার নয়শত) টাকা |
১৪ | লেবানন | ১,৭৪,০০০ (এক লক্ষ চুয়াত্তর হাজার) টাকা |
১৫ | সৌদি আরব | ১,৩৫,০০০ (এক লক্ষ পঁইত্রিশ হাজার) টাকা |
১১. টিটিসি থেকে প্রাক বহির্গমন প্রশিক্ষণ ও সনদ গ্রহণ:
প্রাক বহির্গমন প্রশিক্ষণ মাধ্যমে বিদেশ গমনের নানাবিধ আনুষ্ঠানিকতা, গন্তব্য দেশের সামাজিক নিয়ম নীতি, শ্রম আইন ও নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের কর্ম পরিবেশ সম্পর্কে ধারণা প্রদান করা হয়। বিদেশ যাওয়ার পূর্বে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো পরিচালিত কারিগরি প্রশিক্ষনকেন্দ্র থেকে প্রাক-বহির্গমন প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করে সনদ গ্রহণ এবং এ সংক্রান্ত “বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মীদের প্রাক বহির্গমন প্রশিক্ষণ পুস্তিকা” সংগ্রহ করে নিতে হবে।
ফিঙ্গার প্রিন্ট প্রদান ও স্মার্টকার্ড সংগ্রহ:
প্রাক-বহির্গমন প্রশিক্ষণ সাথে সাথে নিজ জেলার জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে বায়োমেট্রিক ফিঙ্গার প্রিন্ট প্রদান করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার স্বাক্ষর সম্বলিত স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ করতে হবে। এই বায়োমেট্রিক ফিঙ্গার প্রিন্ট বিএমইটির ডাটাবেজে সংরক্ষণ ও বিএমইটি প্রদত্ত স্মার্ট কার্ডে অন্তর্ভূক্ত করা হয়, যা পরবর্তীতে কর্মীর বিদেশ গমনকালে এয়ারপোর্ট ডাটাবেজ এর সাথে পরীক্ষা করা হয়। বর্তমানে চট্টগ্রামে, কুমিল্লা, সিলেট, বগুড়া, যশোর, পাবনা ও রংপুর জেলার জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস থেকে স্মার্ট কার্ড প্রদান করা হচ্ছে। উল্লেখিত জেলা ব্যতীত অন্যান্য জেলার কর্মীদেরকে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো, ৮৯/২, কাকরাইল, ঢাকা থেকে স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ করতে হবে।
১২. গন্তব্য দেশের আবহাওয়া ও দৈনন্দিন প্রয়োজন অনুযায়ী কেনাকাটা ও অন্যান্য করণীয়:
অভিবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর বিদেশ ব্যবহার্য নিম্নবর্ণিত প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনা-কাটা করে যাত্রার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। যেমন- ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত মাপের একটি বড় ব্যাগ এবং নিজের সাথে বহনের জন্য একটি ছোট ব্যাগ।
গন্তব্য দেশের আবহাওয়া অনুযায়ী উপযুক্ত পোশাক এবং নিত্য ব্যবহার্য অন্যান্য জিনিস যেমন: টুথব্রাশ, চিরুনী, সাধারণ স্যান্ডেল, তেল, সাবান ইত্যাদি।
ব্যাগ গোছানোর সময় করণীয়:
অতি প্রয়োজনীয় যেসব জিনিস সাথে নিতে হবে, তার একটি তালিকা কাগজে লিখে সে অনুযায়ী জিনিসপত্র ব্যাগ গুছিয়ে রাখা উচিত ভ্রমনের জন্য এমন ব্যাগ বা সুটকেস কিনতে হবে যা হালকা অথচ শক্ত উপাদান দিয়ে তৈরী এবং যাতে তালা লাগানোর ভালো ব্যবস্থা আছে প্রতিটি ব্যাগে নিজের নাম, গন্তব্য স্থানের ঠিকানা ও নিজের ফোন নম্বর লিখে রাখতে হবে যাতে কোন ব্যাগ হারিয়ে না যায়
ছোট ব্যাগ যেটা নিজের হাতে বহন করা হবে সেটার ভিতর পাসপোর্ট, চাকরির চুক্তিপত্র, বিমান টিকিট, বোর্ডিং কার্ড, স্মার্ট কার্ড, কলম ও নোটবুক রাখতে হবে। নোটবুকে বিমানের নম্বর, গন্তব্য দেশের ঠিকানা, পোষ্টকোডসহ চাকরিদাতার ঠিকানা, ফোন নম্বর লিখে রাখতে হবে
ক্যারিঅন ব্যাগ বা যে ব্যাগটি পেনে নিজের সাথে রাখা হবে, সেখানে স্বর্ণালংকার, ভ্রমণ ও চাকুরি সংক্রান্ত কাগজপত্র এবং অন্যান্য মূল্যবান জিনিস ও দলিল, প্রাক-বহির্গমন প্রশিক্ষণ পুস্তিকা, প্রতিদিন সেবন করা লাগে এমন প্রয়োজনীয় ঔষধ, স্বাস্থ্য সনদ, ঘড়ি, চশমা, চেন্ড ব্যাগের চাবি ইত্যাদি রাখতে হবে।
চেকড ব্যাগ বা যে ব্যাগটি প্লেনে উঠার আগেই কাউন্টারে জমা দিতে হবে, সে ব্যাগের ওজন ২০ কেজির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা বাঞ্ছনীয়। ব্যাগটি দড়ি বা প্যাকিং টেপ দিয়ে শক্ত করে বেঁধে দিতে হবে যাতে যাত্রাকালীন সময়ে ব্যাগ ছিঁড়ে না যায়।
যে কাজটি করা যাবে না:
- চেক্ ব্যাগে স্বর্ণ বা স্বার্ণালংকার, টাকা পয়সা, ভ্রমণ ও চাকরি সংক্রান্ত কাগজপত্র এবং কোন মূল্যবান জিনিস রাখা যাবে না কোন অবস্থাতেই অপরিচিত ব্যক্তির কোন জিনিস বহন করা যাবে না
- ধারালো কোন বস্তু যেমন: ব্লেড, কাঁচি, ছুরি ইত্যাদি এবং বিষ, বিস্ফোরক, এসিড, মাদক ইত্যাদি ক্যারিঅন ব্যাগ বা হাত ব্যাগে বহন করা যাবে না
- আগুন ধরে এমন কোন তরল পদার্থ, দুর্গন্ধযুক্ত পদার্থ, বন্যপ্রাণী, মাছ, মাংস, দুধ, ডিম ও এ জাতীয় অন্য কোন খাদ্য সাথে নেয়া যাবে না
- অরুচিকর অশ্লীল ছবিসম্পন্ন বই বা পণ্য, নগ্ন ছবি সম্বলিত পত্রিকা সাথে নেয়া যাবে না
- বিমানবন্দর এবং বিমানের ভিতরে এমন আচরণ করা যাবে না যাতে আশেপাশে মানুষ বিরক্তি বোধ করে।
এয়ারপোর্টে যাবার আগে চেকলিস্ট অনুযায়ী প্রস্তুতি গ্রহণ:
বিদেশ যাত্রার আগে অজানা আশঙ্কা ও উত্তেজনায় মন অস্থির হয়ে থাকে তাই এ সময়ে নিকটজন কাউকে সব কিছু গুছিয়ে দিতে বলতে হবে যাতে ভুলক্রমে কোন কিছু বাদ পরে না যায়। বিমানের সময়সূচী পুনরায় একবার নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে এবংপ্লেন ছাড়ার সর্বনিম্ন তিন ঘন্টা আগে বিমানবন্দরে উপস্থিত থাকতে হবে। বিমানবন্দরে যাবার জন্য গাড়ি বা ট্যাক্সি আগে থেকে ঠিক করে রাখা উচিত।
চেকলিস্ট অনুযায়ী সব কিছু গাড়িতে উঠলো কি না খেয়াল রাখা প্রয়োজন। বাসা থেকে বিমানবন্দরে যাওয়ার রাস্তায় সম্ভাব্য যানজটের বিষয়টি হিসাবে রেখে বাসা থেকে বের হবার সঠিক পরিকল্পনা করা উচিত। বিমানবন্দেরে পৌঁছাতে বিলম্ব হলে প্লেনের সিট রিজার্ভেশন বাতিল হয়ে যেতে পারে। বোর্ডিং শুরু হবার আধ ঘন্টা আগে চেক-ইন কাউন্টার বন্ধ হয়ে যায়।
১৩. ভ্রমণকালীন আনুষ্ঠানিকতা:
সিকিউরিটি চেক/নিরাপত্তা তল্লাশি ও কাস্টমস্ চেকিং:
নিরাপত্তা তল্লাশির জন্য প্রথমে চেকড্ ব্যাগ, ক্যারিঅন ব্যাগ ও ছোট হাত ব্যাগ এক্সরে মেশিনের মাধ্যমে চেক করাতে হবে।
প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক:
সিকিউরিটি চেক ও কাস্টমস্ চেকিং এর পর প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কে রিপোর্ট করতে হবে। সেখানে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো কর্তৃক প্রদত্ত বহির্গমন ছাড়পত্র বা স্মার্ট কার্ড যাচাই করিয়ে নিতে হয়। স্মার্ট কার্ডটি বিমান বন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কে প্রদর্শন করলে প্রয়োজনীয় সাহায্য সহযোগিতা পাওয়া যাবে। প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কে স্মার্ট কার্ড ব্যবহার করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পূরণকৃত এম্বার্কেশন কার্ড/আরোহণ কার্ড সংগ্রহ করে তাতে স্বাক্ষর প্রদান করতে হবে।
এয়ারলাইন কাউন্টার চেক-ইন:
বিমানের কাউন্টার এয়ারলাইন্স কর্মকর্তার কাছে গিয়ে টিকিট, পাসপোর্ট, চেকড় ব্যাগ ও ক্যারিঅন ব্যাগ জমা দিতে হবে। এয়ারলাইন্স কর্মকর্তা চেকড় ব্যাগ ও ক্যারিঅন ব্যাগ ওজন করবে। ওজন যথাযথ থাকলে চেকড্ ব্যাগে ব্যাগেজ স্টিকার লাগিয়ে দিবে। এবং স্টিকারের আরেকটি অংশ টিকিটের সাথে সংযুক্ত করবে। এয়ারলাইন্স কর্মকর্তা বোর্ডিং কার্ডসহ টিকিট ও পাসপোর্ট ফেরত দিয়ে দেবে। বোর্ডিং কার্ড খুব যত্ন সহকারে সংরক্ষণ করতে হবে।
বোর্ডিং কার্ডে বিমানের সিট নম্বর, কোন ক্ষেত্রে বহির্গমন গেট নম্বর দেয়া হবে। গেট নম্বর দেয়া না থাকলে মাইকে ঘোষণা হবে। বিমান পরিবর্তনের জন্য মধ্যবর্তী বিমানবন্দরে যাত্রা বিরতি থাকলে প্রত্যেকটি বিমান পরিবর্তনের জন্য আলাদা বোর্ডিং কার্ড প্রাদন করা হবে। বিমানবন্দরে ক্যারিঅন ব্যাগ ও ছোট হাত ব্যাগ সব সময় নিজের কাছে রাখা উচিত, এমনকি ওয়াশরুমে যাওয়ার সময়ও। বিমানবন্দরে কেউ তার ব্যাগটি রাখতে অনুরোধ করলে সরাসরি না করতে হবে। নতুবা অনেক অনাকাঙ্খিত পরিস্থিত সৃষ্টি হতে পারে যার ফলে শুধু বিদেশ যাত্রা বিঘ্নিত হওয়া নয় বরং নিজের নিরাপত্তাও হুমকির সম্মুখীন হতে পারে।
ইমগ্রেশন/বহির্গমন:
ইমিগ্রেশন কাউন্টারে প্রার্থীর পাসপোর্ট, ভিসা, জনশক্তি ব্যুরো কর্তৃক প্রদত্ত স্মার্ট কার্ড ইত্যাদি পরীক্ষা করে সঠিক পাওয়া গেলে পাসপোর্টে সিল মেরে যাত্রীকে ভিতরে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয় এবং সেখানে বিমানে আরোহণের পূর্ব পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়।
বিমানে আরোহণের পর করণীয়:
বিমানে আরোহণের পর বোর্ডিং কার্ডে উল্লিখিত সিট নম্বর অনুযায়ী নিজের সিটে গিয়ে বসতে হবে এবং হাতের ব্যাগটি নির্দিষ্ট স্থানে রাখতে হবে। সিটে বসে সিট বেল্টটি বেঁধে নিতে কোন সমস্যা নেয়া যেতে পারে।
বিমানের অভ্যন্তরে খাদ্য ও পানীয়:
বিমানে খাবার, পানি, কোমল পানীয়, চা ও কফি সরবরাহ করা হয়। ২৪ ঘন্টা আগে থেকে এয়ারলাইন্সকে জানিয়ে রাখলে শিশু, বৃদ্ধ, ডায়াবেটিক বা অন্যান্য সমস্যার জন্য তারা আলাদা খাবারের ব্যবস্থা করে। বিমানের ভিতরে ধুমপান করা নিষিদ্ধ।
বিমানে টয়লেট ব্যবহার:
বিমানে একাধিক টয়লেট থাকে। টয়লেট চিহ্নিত করতে বিমানবালার সহায়তা নেওয়া যেতে পারে। টয়লেটের বাইরে occupy লেখা থাকলে বা ছিটকানীতে লাল অংশ দেখা গেলে বুঝতে হবে টয়লেটের ভেতরে কেউ আছে। এ অবস্থায় টয়লেটের বাইরে দরজায় ধাক্কা না দিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করা উচিত। টয়লেট ব্যবহারের পর নির্দিষ্ট বোতাম চেপে টয়লেট পরিষ্কার করতে হবে। টয়লেটে পানির পরিবর্তে টিস্যু পেপার ব্যবহার করতে হয়। মহিলাদের ব্যবহৃত প্যাড কমোডের মধ্যে ফেলা যাবে না এবং টয়লেট নোংরা করা ও পানি দিয়ে ভিজিয়ে রেখে আসা যাবে না। টয়লেটে কোন বোতাম চাপলে পানি আসবে এবং কোথায় কী ফেলা যাবে তা বিমানবালার কাছে জিজ্ঞেস করে নেয়া যায়।
বিশেষ পরামর্শ ও জেনে রাখা ভাল:
বিমানের ভেতরে আবহাওয়া শুষ্ক থাকে তাই শরীরের আর্দ্রতা কমে যায় ফলে চোখ ও নাক জ্বালা করতে পারে। দেহকে আর্দ্র রাখার জন্য পর্যাপ্ত পানি ও ফলের জুস খাওয়া উচিত।
বিমান উড্ডয়ন ও অবতরনের সময় কানের উপর চাপ পরে এবং কান বন্ধ হয়ে যেতে পারে, এতে ভয় পাবার কিছু নেই। বিমান ভ্রমনে যাদের বমি হওয়া কিংবা মাথাঘোরার সমস্যা থাকে, তারা প্রয়োজনে বমি দূর করার ঔষধ সেবন করতে পারেন। ভ্রমণের আগের দিন পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও ঘুমের প্রয়োজন আছে।
১৪. ট্রানজিট বা যাত্রা বিরতি ও আনুষ্ঠানিকতা:
ট্রানজিট বিমানবন্দরে চেকড্ ব্যাগ সংগ্রহের প্রয়োজন নেই। নিজ মালামাল সরাসরি গন্তব্য দেশের বিমানবন্দরে গিয়ে সংগ্রহ। করতে হয়। ট্রানজিটের ক্ষেত্রে মধ্যবর্তী দেশের বিমানবন্দরে বিমান অবতরণের পর-সু-শৃঙ্খলভাবে নেমে সবুজ কিংবা লাল রং দ্বারা চিহ্নিত ক্যানেক্টিং “ট্রান্সফার” তীর চিহ্ন অনুসরণ করে এগিয়ে যেতে হবে।
ট্রানজিট বিমানবন্দরে পুনরায় নিরাপত্তা তলাশি করা হবে। সেখানে নিরাপত্তা তলাশির জন্য ক্যারিঅন ব্যাগ ও ছোট হাত ব্যাগ এক্সরে মেশিনের মাধ্যমে তলাশি করা হবে। নিরাপত্তা তলাশির সময় পরিহিত স্বর্ণালংকার, ঘড়ি, বেল্ট ও জুতা খুলে এক্সরে মেশিনে তলাশির জন্য দিতে হয়। এ সময় যাত্রীর দেহ মেটাল ডিকেটরের মাধ্যমে তলাশি করা হবে। নিরাপত্তা তলাশির পর ক্যারিঅন ব্যাগ, ছোট হাত ব্যাগ, স্বর্ণলংকার, ঘড়ি, বেল্ট, জুতা ও অন্যান্য জিনিসপত্র সতর্কতার সাথে সংগ্রহ করে নিতে হবে।
বোর্ডিং কার্ডে উল্লিখিত ফ্লাইটটি কখন কোন টার্মিনাল গেট থেকে ছাড়বে তা অনুসন্ধান ডেস্ক অথবা ডিসপ্লে মনিটর থেকে জেনে নিতে হবে। বিমানবন্দরে ব্যাগ ও অন্যান্য জিনিসপত্রের দিকে সর্তক দৃষ্টি রাখতে হবে এবং মোবাইল একটি এলার্ম সেট করে নেওয়া যেতে পারে যেন ঘুমিয়ে পড়লেও নির্ধারিত সময়ে ঘুম ভেঙ্গে যায়। বিমান বন্দরে অন্যের দেয়া খাবার, ব্যাগ ও অন্যান্য জিনিসপত্র কোন অবস্থাতেই গ্রহণ করা যাবে না।
পৌঁছানোর পরে গন্তব্য দেশের বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা:
ডিজএম্বার্কেশন কার্ড/অবতরণ কার্ড ও কাস্টমস্ ডিক্লারেশন ফরম:
বিমানের অভ্যন্তরে খাবার পরিবেশনের পরে একজন কেবিনক্রু ডিএম্বার্কেশন কার্ড ও কাস্টমস্ ডিক্লারেশন ফরম প্রদান করবে। প্রদত্ত কার্ড ও ফরম সতর্কতার সাথে পূরণ করে রাখতে হবে। কোন কিছু বুঝতে সমস্যা হলে পাশের যাত্রী অথবা বিমানবালার কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ করা যায়।
ব্যাগ সংগ্রহ ও গন্তব্যস্থলে যাত্রা:
কনভেয়ার বেল্টের ওপর এয়ারলাইন্সের নাম ও ফ্লাইট নম্বর দেয়া থাকবে যেখানে থেকে নিজের ব্যাগটি সংগ্রহ করতে হয়। ব্যাগ হারিয়ে গেলে লস্ট এন্ড ফাউন্ড ডেস্কে অবহিত করে ক্লেইম ফর্ম পূরণ করতে হয়। এ ফর্মে ভ্রমণ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য যেমন, নাম, কর্মস্থলের নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর, পাসপোর্ট নম্বর, ভিসা নম্বর, এয়ারলাইন্সের নাম ও ফ্লাইট নম্বর উল্লেখ করতে হবে। বিমান বন্দর ত্যাগের পূর্বে কাস্টমস্ ক্লিয়ারেন্স ডেস্কে ডিক্লারেশন ফর্ম জমা দিয়ে, কস্টামস্ কর্মকর্তা নির্দেশ দিলে ব্যাগ খুলে দেখাতে হবে। বিদেশের যে ব্যক্তি বিমানবন্দর থেকে নিতে আসার কথা তাকে ছাড়া অন্য কারো সাথে যাওয়া ঠিক হবে না। যদি কেউ নিতে না আসে তবে নিয়োগকর্তার ফোন নম্বরে যোগযোগ করে ট্যাক্সি নিয়ে সেই ঠিকানায় চলে যেতে হবে।
১৫. গন্তব্য দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশন/দূতাবাস সংক্রান্ত বিষয়:
দূতাবাস থেকে অভিবাসী কর্মীর জন্য প্রদত্ত সেবা:
পাসপোর্টের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পূর্বেই দূতাবাসের মাধ্যমে পাসপোর্ট নবায়ন করা উচিত। দূতাবাসের মাধ্যমে পাওয়ার অব এটর্নী/সনদপত্র/নিকাহনামা ও অন্যান্য কাগজপত্র সত্যায়িত করা যায়। বাংলাদেশীদের মধ্যে বিয়ে হলে, বাংলাদেশ দূতাবাস সেক্ষেত্রে বিয়ে রেজিষ্ট্রি করে থাকে।
চাকুরী সংক্রান্ত যে কোন সমস্যার বিষয়ে দূতাবাসে লিখিত আবেদন করতে পারেন। দুর্ঘটনাজনিত মৃত ব্যক্তির বকেয়া বেতন-ভাতা আদায়ের জন্য আইনগত সহায়তা প্রদান করে এবং মৃত ব্যক্তির লাশ দেশে পাঠাতে সহায়তা করে দূতাবাস।
দূতাবাস থেকে প্রবাসী কর্মীর চারিত্রিক সনদপত্র (পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ) প্রদান করা হয়। কোন প্রবাসী বাংলাদেশী তার নিজ প্রচেষ্টায় নিকটজনের জন্য কোন ভিসা সংগ্রহ করলে তা দূতাবাসে পরীক্ষা করিয়ে নিতে পারে।
যদি রিক্রুটিং এজেন্সির দুর্নীতির কারণে কোন অভিবাসী কর্মী বিদেশে সমস্যায় পরে তবে দূতাবাসের মাধ্যমে উক্ত এজেন্সির নামে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোতে অভিযোগ দাখিল করতে পারে। এক্ষেত্রে প্রবাসী বাংলাদেশীগণ অনলাইনে (www.ovijogbmet.org) অভিযোগ করতে পারবেন।
নিরাপত্তাজনিত কারণে নারীকর্মীদের উচিত অবশ্যই কর্মস্থল সম্পর্কে আগেই দূতাবাসকে অবহিত করা বা সমস্যায় পড়ার সাথে সাথে দূতাবাসে যোগাযোগ করা।
অভিবাসী কর্মীর কল্যাণে বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশন/শ্রম উইংয়ের দায়িত্ব:
কোন অভিবাসী কর্মী তার চাকরি সংশিষ্ট বিষয়ে কোন অভিযোগ শ্রম উইংকে অবহিত করলে-
নিয়োগকারীর সাথে অভিযোগকারীর মীমাংসায় সহায়তা করবে অথবা আদালতে মামলার মাধ্যমে অভিযোগ নিষ্পন্ন করার বিষয়ে সহায়তা প্রদান করবে।
প্রয়োজনীয় তথ্যাদি এবং সুপারিশসহ বিষয়টি সরকার বা নিবন্ধকের কাছে প্রেরণ করবে।
১৬. ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা:
সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণ:
নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। শারীরিক ব্যয়াম আবেগকে নিয়ন্ত্রনে রাখতে সহায়তা করে। পরিমিত ও পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ এবং প্রচুর পরিমানে পানি পান করতে হবে। মাদকের সংস্পর্শে যাওয়া উচিত হবে না। আসক্ত হয়ে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। নিজের চুল, ত্বক, নখ ও দাঁত নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে। যৌন রোগ বা কোন সংক্রামক ব্যাধির লক্ষণ দেখা গেলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
এইচ আইভি প্রতিরোধ:
শরীর রক্ত নেওয়ার প্রয়োজন হলে সেই রক্তের এইচআইভি পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। সিরিঞ্জা কখনও অন্য কারো সাথে ভাগাভাগি করা যাবে না। অনিরাপদ যৌন সম্পর্ক থেকে বিরত থাকা বাঞ্ছনীয়।
ফাস্ট এইড বা প্রাথমিক চিকিৎসা:
যে কোন অসুস্থ্যতা কিংবা দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুসারে যথাযথ চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ সময় সাপেক্ষ হলে তাৎক্ষণিকভাবে প্রাথমিক চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। এ কারণে সকলেই উচিত প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে ধারণা রাখা।
প্রাথমিক চিকিৎসায় সাধারণ ব্যবহার্য ঔষুধ সামগ্রী:
- জ্বর বা সাধারণ ব্যাথার জন্য প্যারাসিটামল
- এলার্জির জন্য এন্টিহিস্টামিন
- পাকস্থলীতে অতিরিক্ত গ্যাস হলে রেনিটিডিন
- ডায়রিয়ার জন্য ওরাল স্যালাইন
- পাকস্থলীর প্রদাহের জন্য এ
- আমাশয়ের জন্য মেট্রোনিডাজল।
কেটে গিয়ে রক্তক্ষরণ শুরু হলে:
ক্ষতস্থান ভালোভাবে পরিষ্কার করে জিবানুনাশক লিকুইড দিয়ে সুন্দরভাবে মুছে দিতে হবে। হাতের কাছে বরফ পাওয়া গেলে ক্ষত স্থানে। বরফ ঘষে দেওয়া যেতে পারে। রক্ত বন্ধ করার জন্য তুলা অথবা জীবানুনাশক ব্যান্ডেজের টুকরা দিয়ে ক্ষতস্থান বেঁধে দিতে হবে। এতে নিরাময় না হলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
আগুন ও বিদ্যুৎ সম্পর্কে সতর্কতা:
পুড়ে গেলে পোড়াস্থান কিছুসময় ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হয়। পুড়ে যাওয়া ক্ষতস্থানে চুলকানো বা ফোসকা হলে তা ফাটানো উচিত নয়। বিদ্যুৎ সংক্রান্ত দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য ইলেকট্রিক্যাল যন্ত্রপাতি সতর্কতার সাথে ব্যবহার করতে হবে।
বিদ্যুতাহত হলে প্রথমে মেইন সুইচ বা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিতে হবে। বিদ্যুতাহত ব্যক্তির শরীরের রক্ত জমাট বেঁধে যায় তাই বিদ্যুতাহত ব্যক্তির সমস্ত শরীর ম্যাসাজ করে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হয়।
জ্বরে আক্রান্ত হলে সাধারণ সেবা:
মানুষের দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮.৬ সেলসিয়াস। জ্বর পরিমাপের থার্মোটিটারে যদি তাপমাত্রা ১০০ সেলসিয়াস এর উপরে দেখা যায় তাহলে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসাবে নিম্নলিখিত সেবা দেওয়া যেতে পারে –
রোগীর মাথায় পর্যাপ্ত পানি ঢালতে হবে এবং তরল জাতীয় খাবার দিতে হবে। তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে বার বার সমস্ত শরীর পানি নি মুছে দিতে হবে। তাপমাত্রা ১০২ বা এর বেশী হলে বরফের ব্যাগ ব্যবহার করা যেতে পারে। আরোগ্য না হলে অবশ্যই কোন বিশে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
হিট স্ট্রোক:
অতি গরমে অনেক সময় মানুষ জ্ঞান হারিয়ে ফেলে, একে বলে হিট স্ট্রোক। বিশেষ করে যারা খোলা আকাশের নিচে রোদের মধ্যে অনেক সময় ধরে কাজ করে, তাদের এই সমস্যায় আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা থাকে।
হিট স্ট্রোকের প্রাথমিক লক্ষণ:
মাথা ঘোরা ও বমি হওয়া, মাথা ঝিম ঝিম করা বা ব্যাথা করা, অনেক গরম থাকা সত্ত্বেও ঘাম না হওয়া, পেশী দূর্বল হয়ে যাওয়া, শ্বাস প্রাশ্বাস অস্বাভাবিক হওয়া, হৃদকম্পন দ্রুত বা ধীরে হওয়া, অস্বাভাবিক আচরণ করা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।
হিট স্ট্রোকের প্রাথমিক চিকিৎসা:
হিট স্ট্রোকের আক্রান্ত হলে বিলম্ব না করে মাথায় প্রচুর পানি ঢালতে হবে। রোগীর মাথার উপরে জোরে ফ্যান চালিয়ে দিতে হবে। রোগীর মাথা, ঘাড় ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে দিতে হবে। সম্ভব হলে সমস্ত গায়ে পানি ঢালতে হবে।
১৭. বিদেশে গমন সংক্রান্ত বিষয়ে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের:
বিদেশ গমনের ক্ষেত্রে প্রতারকের হাত থেকে যেমন সতর্ক থাকতে হবে তেমনই প্রতারিত হলে এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করাটাও জরুরী।
রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে যেসব কারণে অভিযোগ দায়ের করতে পারেন:
বিদেশ গমনের জন্য রিক্রুটিং এজেন্সিকে টাকা দিয়ে প্রতারিত হলে
রিক্রুটিং এজেন্সির ভুলের কারণে বিমানবন্দর থেকে ফেরত এসে থাকলে বা বিমান বন্দরে আটক হয়ে থাকলে
বিদেশে গিয়ে চুক্তি অনুযায়ী প্রাপ্য সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হলে।
কোথায় অভিযোগ করবেন:
একজন প্রতারিত ব্যক্তি নিচের প্রতিষ্ঠানগুলোতে অভিযোগ করতে পারেন:
- জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো, ৮৯/২ কাকরাইল, ঢাকা
- সকল জেলা প্রশাসকের দপ্তরে স্থাপিত প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক
- সকল জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস
- বায়রা অরবিট্রেশন সেল
- গন্তব্য দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস/লেবার উইং
- বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা
- সিভিল কোর্ট/আদালত
- অভিবাসী কর্মীদের সমস্য নিয়ে কাজ করে এমন সকল এনজিও
কিভাবে অভিযোগ দায়ের করবেন:
- বিদেশে অবস্থানকালীন সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ দূতাবাস অথবা লেবার উইং এ লিখিত আকারে অভিযোগ পাঠাতে পারেন।
- অভিবাসী কর্মী সরাসরি দেশের মানবাধিকার সংস্থার মাধ্যমে বিএমইটিতে অনলাইনে, লিখিত আকারে বা ডাকযোগে অভিযোগ পাঠাতে পারেন।
- বিদেশে থাকাকালীন আপনার পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে বিএমইটিতে অভিযোগ দাখিল করতে পারেন।
আইনগত সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
১. চাকুরির চুক্তিপত্র, ২. ওয়ার্ক পারমিট, ৩. পাসপোর্ট, ৪. স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদপত্র ৫. স্মাটকার্ড
১৮. বিদেশ থেকে অর্থ (রেমিটেন্স) প্রেরণ:
একজন অভিবাসী তার উপার্জিত যে অর্থ বৈধভাবে দেশে তার পরিবারের কাছে প্রেরণ করেন সেটাই রেমিটেন্স।
বৈধভাবে টাকা পাঠানোর উপায়:
নিম্নোক্ত মাধ্যমে বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো বৈধ-
১. ব্যাংকের মাধ্যমে ২. ইন্সট্যান্ট ক্যাশ ৩. পোষ্ট অফিস ৪. মানি এক্সচেঞ্জ ৫. মোবাইলের মাধ্যমেও টাকা পাঠানো যায়।
ব্যাংক এ্যাকাউন্ট খোলার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ:
বৈধ উপায়ে দেশে টাকা পাঠানোর সবচাইতে বড় মাধ্যম হলো ব্যাংক। ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য দুই কপি পাসপোর্ট সাই এবং পাসপোর্টের ফটোকপিসহ নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হয়।
হুন্ডি কি?
হুন্ডি একটি অবৈধ ব্যবসা। এক দেশ থেকে অন্যদেশে গোপনে মুদ্রা পাচারের প্রক্রিয়াকেই হুন্ডি বলে। নিজে অথবা প্রতিনিধির মাধ্যমে প্রাপকের কাছে ক্যাশ পৌঁছে দিবার পর প্রেরণকারী ফোনে কথা বলে নিশ্চিত হন যে টাকা তার পরিবারের কাছে পৌছে গেছে। এই প্রক্রিয়ায় টাকা পাঠানোকে হুন্ডি বলে। হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ প্রেরণে অভিবাসীরা সাময়িক কিছু সুবিধা পেলেও দেশের জন্য এটা বড় ধরনের ক্ষতি।
বৈধভাবে ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা পাঠানোর বিশেষ কিছু সুবিধা:
কতিপয় চার্জ ফ্রি: ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স প্রেরণের ক্ষেত্রে ডাকমাশুল ফ্রি, সেই সাথে আয়কর রিবেটের ব্যবস্থা রয়েছে।
রাজউক-এর প্লট: প্রবাসীদের জন্য রাজউকের প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়।
সর্বাধিক সুদবাহী বন্ড কেনার সুবিধা: বিদেশ থেকে প্রেরিত অর্থে ওয়েজ আনার্স ডেভেলপমেন্ট বন্ড ক্রয় করে প্রবাসীরা লাভবান হতে পারেন। বর্তমানে এই বন্ডের সুদের হার শতকরা ১২ টাকা। ২৫ হাজার টাকা অথবা তার অধিক মূল্যের বন্ড ক্রয় করলে অতিরিক্ত কোন ব্যয় ছাড়াই মৃত্যু ঝুঁকি বীমার সুবিধা পাওয়া যায়। এ ছাড়াও রয়েছে ডলার ইনভেস্টেমেন্ট বন্ড ও ডলার প্রিমিয়াম বন্ড। ১ হাজার ৫ হাজার, ১০ হাজার , ২৫ হাজার, ৫০ হাজার এবং ১ লাখ টাকা মূল্যমানে এই বন্ড ক্রয় করা যায়। নিচের ছকের মাধ্যমে ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর সুবিধা ও হুন্ডির মাধ্যমে পাঠানোর অসুবিধা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাবে।
নং | ব্যাংকের মাধ্যমে | হুন্ডির মাধ্যমে |
১ | ব্যাংকের মাধ্যমে প্রেরিত অর্থ বৈধ টাকা বলে গৃহীত হয়। | বিদেশ থেকে প্রেরিত অর্থ কালো টাকা হিসেবে গৃহীত হয়। |
২ | ব্যাংকের মাধ্যমে প্রেরিত অর্থের কাগজপত্র পাওয়া যায়। | কোনো কাগজপত্র পাওয়া যায় না। |
৩ | ব্যাংকের মাধ্যমে প্রেরিত অর্থ সরকারী রেকর্ডভুক্ত করা হয়। | নগদ টাকা আদান-প্রদান হয়, কোনো সরকারি রেকর্ড থাকে না। |
৪ | রেমিটেন্স প্রেরণকারীর ব্যাংক থেকে সহজে ঋণ নেয়া যায়। | হুন্ডির মাধ্যমে টাকা প্রেরণকারীর ব্যাংক সুবিধা নেই। |
৫ | প্রবাসী ব্যক্তির অর্থ চোরাচালান, সন্ত্রাসী ও অবৈধ অস্ত্র আদান-প্রদানে ব্যবহার করা যায় না। | আসামাজিক ব্যক্তি অর্থ চোরাচালান, সন্ত্রাসী ও অবৈধ অস্ত্র আদান-প্রদানে ব্যবহার করতে পারে। |
৬ | বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি পায়। | হুন্ডির টাকা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধিতে কোনো অবদান রাখতে পারে না। |
৭ | টাকা ব্যাংকে থাকে বলে অর্থ অপচয় হয় না। | নগদ টাকা হাতে থাকলে তা অব্যবহার অথবা অপচয় হবার সম্ভাবনা থাকে। |
১৯. অর্থ ব্যবস্থাপনা ও বিনিয়োগ:
অর্থ ব্যবস্থাপনা ও বিনিয়োগ সম্পর্কে কিছু কথা:
বিদেশ থেকে ফেরত আসার সাথে সাথে পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজন সবাই বিভিন্ন ধরনের সৌখিন চাহিদা পূরণের অনুরোধ করে। এক্ষেত্রে একজন অভিবাসীকে বিচক্ষণতার পরিচয় দিতে হবে এবং সঞ্চিত টাকার সঠিক ব্যবহারের পরিকল্পনা করতে হবে। বিদেশ থেকে
ফিরে এসে নিজের প্রেরিত রেমিটেন্স বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করা যায়। রেমিটেন্স এর মাধ্যমে নিজ এলাকায় ক্ষুদ্র ব্যবসা ও ক্ষুদ্র শিল্প, কৃষি খামার, ডেইরি ও পোল্ট্রি খামার অথবা পচন্দমত কোন লাভজনক খাতে বিনিযোগ করা যায়। প্রবাসীদের প্রেরিত টাকা দিয়ে ব্যবসায়িক ঋণ সুবিধা নেওয়া যায়। বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে স্বল্পসুদে লোন নিয়ে আবাসন প্রকল্প, গাড়ি ক্রয়, পরিবহন খাত, কৃষি খামার, ডেইরি ও পোল্ট্রি খাত, সম্পদ ক্রয়, ক্ষুদ্র ব্যবসায় ও ক্ষুদ্র শিল্পে বিনিয়োগ করে ব্যবসা করা যায়। যে সকল সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক প্রবাসীদের জন্য অতিরিক্ত সুযোগ সুবিধা প্রদান করে, সে বিষয়ে খোঁজ নিতে হবে।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ:
সরকারী ও বেসরকারী ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও পোস্ট অফিসের বিভিন্ন সঞ্চয় প্রকল্পে ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগের সুযোগ আছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিানের প্রচলিত সঞ্চয় প্রকল্প সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। ডাকঘর সঞ্চয়পত্র একটি গুরুত্বপূর্ণ সঞ্চয়ের মাধ্যম। এইসব খাতে টাকা। খাটালে বা এই ধরনের সঞ্চয়পত্র কিনলে মুনাফা পাওয়া যায়। আবার প্রয়োজনে যে কোনো সময় তা ভাঙানো যায় এবং মুনাফাসহ মূল টাকা পুনরায় বিনিয়োগ করা যায়।
আর্থিক ঋণ এবং বিনিয়োগ সহায়তায় প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক:
পরিবার ও দেশের উন্নয়নে কেহ যখন বিদেশগামী তখন প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক তাকে ৯% সুদে জরুরী প্রয়োজনে স্বল্প সময়ে ঋণ প্রদান করবে। এমনকি বিদেশ থেকে দেশে ফিরে এসে ব্যবসা করতে চাইলে, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ১১% সুদে ঋণ প্রদান করবে। এছাড়াও
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে মাসিক ডিপোজিট স্কীম, প্রবাসী সঞ্চয়ী হিসাব, প্রবাসীদের জন্য দিগুণ আমানত প্রকল্প ইত্যাদি খাতে অর্থ বিনিয়োগ করা যায়। সারাদেশে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ৫৪টি শাখার যে কোনটিতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে ঋণ গ্রহণ করা যেতে পারে।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের হেড অফিস
প্রবাসী কল্যাণ ভবন, ৭১-৭২ ইস্কাটন রোড, ঢাকা
ফোন: ০২ ৮৩২২৮৭৩, ৮৩২১৮৭৮
ওয়েব সাইট: www.pkb.gov.bd
২০. অভিবাসী কর্মীর কর্মক্ষেত্র সম্পর্কিত বিষয়সমূহ:
কর্মক্ষেত্রে খাপ খাওয়ানো:
অভিবাসী কর্মীরা গন্তব্যস্থলে পৌছানোর পর প্রাথমিক পর্যায়ে বাড়ীর জন্য মনোঃকষ্ট অনুভব করে। যেহেতু তারা নিজস্ব পারিবারিক পরিবেশ ছেড়ে আসে এবং একই সময়ে নতুন সামাজিক পরিবেশে খাপ খাইয়ে নিতে হয় তাই এই অনুভূতি অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে সফল অভিবাসন এবং উন্নতির লক্ষ্যে কর্মক্ষেত্র ও অন্যান্য পরিবেশে খাপ খাওয়ানোর জন্য মানসিকভাবে তৈরি থাকতে হবে। যদি লক্ষ্য নির্দিষ্ট থাকে তাহলে অভিযোজনের মাধ্যমে সফল অভিবাসন নিশ্চিত। উদ্দেশ্য হবে এমন যে- “পরবর্তী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আমি নিজেকে এ নতুন পরিবেশে খাপ খাইয়ে নিব এবং ভালো কাজের মাধ্যমে আমার নিয়োগকর্তার কাছ থেকে সুনাম অর্জন করব”। এ ধরনের লক্ষ্য আপনাকে বিদেশের কাজে আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। এছাড়া কাজে মনোনিবেশ, নিয়মিত ব্যায়াম, নিয়মিত স্বদেশে যোগাযোগ রাখলে কর্মপরিবেশে খাপ খাওয়ানো সহজ হবে।
২১. কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা ঝুকি মোকাবেলায় করণীয়:
একটি মাত্র দুর্ঘটনা নিজের ও পরিবারের সারা জীবনের স্বপ্নকে শেষ করে দিতে পারে। তাই নিরাপত্তার বিষয়টি সমগ্র জীবনকালেই সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপত্তার প্রয়োজনে প্রবাসে কর্মক্ষেত্রে নিম্নলিখিত নির্দেশগুলি মেনে চলতে হবে:
১. যে কোন নির্মাণ কাজে মাথায় হেলমেট ব্যবহার করা আবশ্যক। যে কোন বৈদ্যুতিক মেরামতের সময় মেইন সুইচ বন্ধ করে, পায়ে রাবারের জুতা পরে কাজ করতে হবে।
২. কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ অনুযায়ী মুখে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। ওয়েল্ডিংয়ের সময় চোখে অবশ্যই উপযুক্তি গগলস ব্যবহারি করতে হবে। ড্রিলিং, গ্রাইন্ডিং বা স’য়িংয়ের সময় সেফটি গগলস ব্যবহার করতে হবে।
৩. বাগানে কাজের সময় মুখে মাস্ক, পায়ে গামবুট এবং শরীরে বিশেষ ধরণের লোশন ব্যবহার করতে হবে। উঁচু ভবন বা অন্য কোন উচু স্থানে কাজ করার সময় শরীরে সেফটি হারনেস সঠিকভাবে বেঁধে নিতে হবে। রাসায়নিক কারখানায় কাজ করার সময় হাতে গ্লভস এবং গায়ে বিশেষ পোষাক পরিধান করতে হবে। হাসপাতালে কাজের সময় মুখে মাস্ক এবং গায়ে বিশেষ পোষাক পরিধান করা উচিত।
৪. নিজের ব্যবহৃত সকল যন্ত্রপাতি কাজ শেষে নির্দিষ্ট স্থানে সাজিয়ে রাখতে হবে।
৫. উন্নত দেশের রাস্তায় চলমান গাড়ি অত্যন্ত দ্রুতগামী হয়ে থাকে। রাস্তা পারাপারে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
২২. ওয়ার্ক-পারমিট:
ওয়ার্ক-পারমিট হলো বিদেশে কাজের অনুমতিপত্র যা সংশ্লিষ্ট দেশের লেবার ডিপার্টমেন্ট থেকে সরবরাহ করা হয়। বিদেশে যাওয়ার পর যা তাড়াতাড়ি সম্ভব নিয়োগকর্তার নিকট থেকে ওয়ার্ক-পারমিট সংগ্রহ করতে হবে। তাহলেই বিদেশে বৈধ ও স্বাধীনভাবে চলাফেরা করা সম্ভব হবে
অনেক দেশেই বিমানবন্দরে শ্রমিকদের ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্সের সময় এক বছরের ওয়ার্ক-পারমিট অনুমোদন করা হয়। অন্যান্য দেশের লেবার অফিস থেকে এই ওয়ার্ক-পারমিট দেয়া হয়।
২৩. দূর্যোগ মোকাবেলা:
কর্মক্ষেত্রে বা বাসস্থানে আগুন লাগলে করণীয়:
আগুনের উৎপত্তি কোথা থেকে হয়েছে এবং সত্যিই আগুন লেগেছে কিনা জানার চেষ্টা করতে হবে। প্রাথমিক অবস্থাতেই আশেপাশে থাকা লোকজনককে সাথে নিয়ে নিরাপদ দুরত্বে থেকে আগুনের উপর পানি নিক্ষেপে করতে হবে এবং নিরাপত্তা কর্মী ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিতে হবে। ছোট কোন অগ্নি কান্ডের ক্ষেত্রে কম্বল, কাথা, বস্তা বা মোটা কাপড় ভিজিয়ে চাপা দিতে হয়। বৈদ্যুতিক সর্টসার্কিটের দ্বারা অগ্নি সংযোগ হয়ে থাকলে দ্রুত মেইন সুইচ বন্ধ করে দিতে হবে।
বাসভবনে অগ্নি দূর্ঘটনা হলে ধীরে সুস্থে ভবন থেকে বের হয়ে আসতে হয়। পরনের কাপড়ের আগুন লাগলে দৌড় দেওয়া যাবে তাতে আগুন আরো বেড়ে যাবে। এক্ষেত্রে মাটিতে গড়াগড়ি দিতে হবে। আগুনের বিস্তার রোধ করতে আশেপাশের দাহ্য বস্তু দ্রুত সরি নিতে হবে।
ভূমিকম্পের সময় করণীয়:
ভূমিকম্প শুরু হওয়ার সাথে সাথে মাটিতে হামাগুড়ি দিয়ে, শক্ত মজবুত কোন আসবাবের নিচে ঢুকে আশ্রয় নিতে হবে এবং সেটিকে হাত দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরতে হবে যাতে সরে না যায়। আসবাবপত্র না পেলে ঘরের ভিতরের দিরে দেয়ালের নিচে আশ্রয় নিতে হবে। বাইরের দিকের দেয়াল বিপজ্জনক। জানালার কাঁচ, আয়না, আলমারি, দেয়ালে ঝুলানো বস্তু থেকে দূরে থাকতে হবে।
বহুতল ভবনের উপরের দিকে অবস্থান করলে ঘরের ভিতরে অবস্থান করাই ভালো। কারণ নিরাপদ স্থানে পৌছানোর পূর্বেই ভূমিকম্পের মাত্র বেড়ে যেতে পারে। নিচে নামার জন্য কোনভাবেই লিফট ব্যবহার করা যাবেনা, সিড়ি দিয়ে হেঁটে নামতে হবে।
২৪. কর্মক্ষেত্রে বর্জনীয় বিষয়ে পরামর্শ:
প্রবাসে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতির মানুষের সাথে কাজ করতে হয়। সেখানে সর্বদা সবকিছু নিজের অনুকূলে নাও থাকতে পারে তাই সকল সমস্যাই ধৈর্য্য ও বুদ্ধি দিয়ে মোকাবেলা করতে হয়।
- কর্মক্ষেত্রে কোন ন্যায্য দাবী আদায়ের লক্ষ্যে ধর্মঘট করা যাবে না
- ইভটিজিং বা নারীঘটিত কোন অপরাধ থেকে নিজেকে
- আলোচনার মাধ্যমে কর্মক্ষেত্রের সমস্যা সমাধান করতে হবে
- সংযত রাখা বাঞ্ছনীয়
- আলোচনার মাধ্যমে সমাধান না হলে যথাযথ আইনী প্রক্রিয়ারমধ্যে দিয়ে যেতে হবে।
- নিয়োগকর্তা পরিবর্তন করতে হলে পূর্বানুমতি গ্রহণ করতে হবে
- সহকর্মীর সাথে যে কোন ধরনের মনোমালিন্য, ভুল বুঝাবুঝি এড়িয়ে চলতে হবে।
- বিদেশি নাগরিকের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া উচিৎ নয়।
যে কারণে কর্মীদের দেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে:
- ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর অতিরিক্ত মেয়াদে অবস্থান করলে।
- ওয়ার্ক পারমিট ব্যাতিত কোন কাজে নিযুক্ত হলে। জটিল
- কোন রোগে আক্রান্ত হলে যা মারাত্মকভাবে সংক্রামক অথবা নিরাময়ের অযোগ্য।
- নিয়োগকর্তার সাথে সম্পর্ক নষ্ট হয়ে গেলে।
- বে-আইনি ভাবে চাকুরী পরিবর্তন করা বা কর্মস্থল থেকে পলায়ন করলে।
২৫. অভিবাসী কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের অধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক কনভেনশনঃ
অভিবাসী শ্রমিকদের সাপ্তাহিক ছুটির কথা বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা অভিবাসী শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের অধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক কনভেনশন প্রণয়ন করে। ২০০৩ সালের ১ জুলাই কনভেনশনটি কার্যকর হয়।
২৬. ছুটি শেষে দেশে ফেরত আসা নিয়ে কিছু কথা:
ছুটির মেয়াদ শেষ হলে বিদেশে অবস্থান অবৈধ হয়ে যায়। কেউ যদি ছুটির মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে সেদেশে অবস্থান করে কাজ করে তাহলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে পুলিশ হেফাজতের সম্মুখীন হতে হয়। চাকরির মেয়াদ নবায়ন না করলে বিদেশে থাকার অধিকার থাকে না। তাই ছুটির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে অবশ্যই টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া উচিত। ছুটির মেয়াদ শেষে বিদেশে অবস্থান করলে নানা ধরনের ঝুঁকি ও ঝামেলা থাকে। তাই অবশ্যই ছুটি শেষে দেশে ফেরার সময় সবকিছু গুছিয়ে দেশে ফেরত আসা উচিত। কেউ যদি ২,৫০০ ডলারের বেশি বৈদেশিক মুদ্রা সঙ্গে আনতে চান তবে তা কাস্টমসের কাছে ডিক্লেয়ার করতে হবে। অন্যথায় শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। ২,০০০ ডলার বা এর কম হলে কোন ঘোষণা ব্যতীত আনা যাবে, তবে কেউ ঘোষণা দিলে এটি রেমিটেন্স বলে গণ্য হবে।
২৭. নিত্য প্রয়োজনীয় ইংরেজি ও আরবি শব্দাবলী:
ক্র. নং | বাংলা | ইংরেজি | আরবি | বাংলায় আরবি উচ্চারণ |
০১ | আমি (পুরুষ ও স্ত্রী) | I | أَنَا | আনা |
০২ | আমরা | We | نَحنُ | নাহনু |
০৩ | তুমি, আপনি | You | أَنتَ | আনতা |
০৪ | তুমি, আপনি (স্ত্রী) | You | أَنتِ | আনতি |
০৫ | তোমরা (পুরুষ ও স্ত্রী) | You (All) | أَنتُم | আনতুম |
০৬ | তোমরা (স্ত্রী) | You (All) | أَنتُنَّ | আনতুন্না |
০৭ | সে (পুরুষ) | He | هُوَ | হুয়া |
০৮ | সে (স্ত্রী) | She | هِيَ | হিয়া |
০৯ | এটি, সেটা | It, This | هَذَا | হাযা |
১০ | তাহারা সকল (পুরুষ) | They | هُم | হুম |
১১ | তাহারা সকল (স্ত্রী) | They | هُنَّ | হুন্না |
১২ | কি? | What? | مَا | মা |
১৩ | কি? | What? | مَاذَا | মাযা |
১৪ | কি? (কোন জিনিস) | What? | أَيُّ شَيْءٍ | আইয়ু শাইয়িন |
১৫ | কখন? | When? | مَتَى | মাতাআ |
১৬ | কত? | How Much? | كَمْ | কাম |
১৭ | কিভাবে? | How? | كَيْفَ | কাইফা |
ক্র. নং | বাংলা | ইংরেজি | আরবি | বাংলায় আরবি উচ্চারণ |
১৮ | কেন | Why? | لِمَاذَا | লিমাযা |
১৯ | এটা | That | ذَلِكَ | যালিকা |
২০ | সাথে | With | مَعَ | মাআ |
২১ | যাও | Go | اِذْهَبْ | ইযহাব |
২২ | ভাল, উত্তম | Good | جَيِّد | জাইয়্যিদ |
২৩ | ধন্যবাদ | Thank | شُكْرًا | শুকরান |
২৪ | খারাপ | Bad | سَيِّئ | সাইয়্যি |
২৫ | মাফ করিবেন | Forgive, Excuse | مَعْذِرَة | মা‘যিরাহ |
২৬ | হ্যাঁ | Yes | نَعَمْ | নাম |
২৭ | না | No | لَا / كَلَّا | লা / কাল্লা |
ক্র. নং | বাংলা | ইংরেজি | আরবি | বাংলায় আরবি উচ্চারণ |
২৮ | ভাত, চাল | Rice | أَرُزّ | আরুজ |
২৯ | রুটি | Bread | خُبْز | খুবয |
৩০ | আটা | Flour | دَقِيق | দাকীক |
৩১ | ময়দা | Fine Flour | دَقِيق نَاعِم | দাকীক নাআইম |
৩২ | দুধ | Milk | لَبَن | লাবান |
৩৩ | ডিম | Egg | بَيْض | বাইয |
৩৪ | মাংস | Meat | لَحْم | লাহম |
৩৫ | গরুর মাংস | Beef | لَحْمُ البَقَر | লাহমুল বাক্বার |
৩৬ | খাসির মাংস | Mutton | لَحْمُ الغَنَم | লাহমুল গ্বানাম |
৩৭ | ডাল | Pulses | بُقُول | বুকুল |
৩৮ | খাদ্য | Food | طَعَام | তাআম |
৩৯ | চিনি | Sugar | سُكَّر | সুক্কার |
৪০ | মাছ | Fish | سَمَك | সামাক |
৪১ | সকালের খাবার | Break Fast | فُطُور | ফুতুর |
৪২ | দুপুরের খাবার | Lunch | غَدَاء | গ্বাদাআ |
৪৩ | রাতের খাবার | Dinner | عَشَاء | আশাআ |
৪৪ | চা | Tea | شَاي | শাই |
৪৫ | পানি | Water | مَاء / مِيَاه / مَايِ | মা / মিয়াহ / মায়ি |
২৮. বিভিন্ন প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে কোথায় যোগাযোগ করতে হবে?
বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিস (বায়রা)
বায়রা ভবন, ১৩০, নিউ স্কাউটন রোড, ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ।
ফোন: +৮৮-০২-৯৩৪৫৫৮৭, +৮৮-০২-৯৩৩১২৪৪, +৮৮-০২-৯৩৪৮০৯৬,
ই-মেইল: baira1984@gmail.com,
ওয়েবপেজ: www.baira.org.bd
বাংলাদেশ ওভারসিস এমপ্লয়মেন্ট এন্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল)
৭১-৭২ ইস্কাটন রোড (পঞ্চম তলা) ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ।
ফোন: +৮৮-০২-৯৩৩৬৫০৮, +৮৮-০২-৯৩৬১৫১৫ ই-মেইল: info@boesel.org.bd
ওয়েবপেজ: www.hrexport.org, www.baira-hrexport.org
info@bmet.org.bd; www.bmet.gov.bd
প্রবাসীদের জন্য তথ্য সেবায় “প্রবাসবন্ধু”
প্রবাসী কর্মীদের যে কোন প্রয়োজনীয় তথ্য সেবা গ্রহণ করতে সরাসরি ফোন করতে হবে “প্রবাসবন্ধু” কল সেন্টারের নিম্নলিখিত নম্বর:
০১৭৮৪-৩৩৩৩৩৩, ০১৭৯৪-৩৩৩৩৩৩, +৮৮০২৯৩৩৪৮৮৮
দেশভিত্তিক বাংলাদেশের দূতাবাস/উচ্চ কমিশন/কনসুলেটের যোগাযোগের ঠিকানা
🌍 এশিয়া
সৌদি আরব (রিয়াদ)
House No. 33, Al Sheikh Hussain Bin Hasan Street, Al Wazarat, Sulaimania, Riyadh 11693
☎ +966 11-419 5300
📧 infobangladeshembassy.org.sa
সৌদি আরব (জেদ্দা, কনসুলেট জেনারেল)
Kilo-3, Makkah Road, Jeddah
📧 cg@bcgjeddah.com
কাতার (দোহা)
Musaab bin Omair Street, Al Hilal Area, Doha
📧 bdotoat@qatar.net.qa
সংযুক্ত আরব আমিরাত (আবুধাবি)
Plot No. 21, Plot No. W-14/01, Al Rowdha Area, Abu Dhabi
☎ +971 2 446 5100
📧 Mission.abudhabi@mofa.gov.bd
সংযুক্ত আরব আমিরাত (দুবাই ও উত্তরাঞ্চলীয় এমিরেটস, কনসুলেট জেনারেল)
Abdul Aziz Al Mulla Villa, Al Muteena Area, Deira
📧 bcgdubaiemirates.net.ac
ওমান (মাসকাট)
Villa No. 4207, Way No. 3052, Shatti Al Qurum, Postal Code 112, Ruwi, Muscat
☎ +968 24 698 660
📧 info@bdembassyoman.org
কুয়েত
Plot No. 361, Ali Bin Abi Talib Street, Block 6, Surra, Kuwait
☎ 531-6042, 531-6043
📧 bdoot@ncc.moc.kw
মালয়েশিয়া (কুয়ালালামপুর, হাই কমিশন)
Block-1, Lorong Damai-7, Jalan Damai, 55000, Kuala Lumpur
☎ 2148 7940, 2142 3271
📧 bdhoot@pc.jaring.my
সিঙ্গাপুর
91, Bencoolen Street 06-01, Sunshine Plaza, Singapore
📧 bdoot@signet.com.sg
মালদ্বীপ
6, Uruffiya (7th & 8th Floor), Male, Maldives
☎ (+960) 3315541, 3320859
📧 bdootfmal@dhivehinet.net.mv
থাইল্যান্ড (ব্যাংকক)
47/8 Ekamai Soi 30, Sukhumvit 63, Bangkok 10110
চীন (বেইজিং)
42, Guang Hua Lu, Chao Yang District, Beijing-100600
হংকং
13/F, Kyoto Plaza, 491 Lockhart Road, Causeway Bay
ভারত (নয়াদিল্লি, হাই কমিশন)
EP-39, Dr. S. Radhakrishnan Marg, Chanakyapuri, New Delhi-110021
🌍 ইউরোপ
ফ্রান্স (প্যারিস)
109, Avenue Henri Martin, 75016 Paris
যুক্তরাজ্য (লন্ডন, হাই কমিশন)
28 Queen’s Gate, London SW7 5JA
ইতালি (রোম)
Via Dell’Antartide, 00144 Rome
জার্মানি (বার্লিন)
Kaiser-Friedrich-Str. 7, 10585 Berlin
নেদারল্যান্ডস (হেগ)
Amaliastraat 9, 2514 JC, The Hague
🌍 আমেরিকা
যুক্তরাষ্ট্র (ওয়াশিংটন ডিসি, এম্বাসি)
3510 International Drive NW, Washington, DC 20008
যুক্তরাষ্ট্র (নিউ ইয়র্ক, কনসুলেট জেনারেল)
34-18 Northern Boulevard, Long Island City, NY 11101
যুক্তরাষ্ট্র (লস অ্যাঞ্জেলেস, কনসুলেট জেনারেল)
4201 Wilshire Blvd, Suite #605, Los Angeles, CA 90010
কানাডা (অটোয়া, হাই কমিশন)
350 Sparks Street, Suite 1100, Ottawa, Ontario, K1R 7S8
🌍 আফ্রিকা
মিশর (কায়রো)
18, Hayeet El-Tadrees Street, Dokki-12311, Giza, Cairo
দক্ষিণ আফ্রিকা (প্রিটোরিয়া)
410 Farenden Street, Arcadia, Pretoria

Tamim
Certified Trainer & Assessor (NSDA)
Instructor – Fenchuganj Technical Training Center
CBA Level-4 & CBT&A Level-4
Graphics Design Level-3
Graphics Design for Freelancing Level-3 & 4
Computer Operation Level-2 & 3
It Support Services Level-3
Programmable Logic Controller (PLC) Level-4
Digital Marketing Level-3, 4 & 6
Leave a Reply